
আমার নবী
হাসান ইনাম
লেখক, গল্পকার
তিনি প্রেরিত হয়েছিলেন শান্তির বার্তা নিয়ে। দয়াশীল ছিলেন তিনি। নরম স্বভাবের ছিলেন। অন্ধকার যুগেই তিনি সবার নিকট ছিলেন বিশ্বাসী এক ব্যক্তি। নরম স্বরে কথা বলতেন। রূঢ় ব্যবহার কখনই করতেন না। পথে কাঁটা বিছিয়ে দেওয়া বুড়ির গল্প তো আমাদের সবারই জানা। তারপর সেই রক্তাক্ত তায়েফ….
রক্তে জমাট বেঁধে যাওয়া জুতা মোবারক। তিনি তবুও রুষ্ট হননি। উল্টো কল্যাণের প্রার্থনা করেছেন। স্নিগ্ধ হৃদয়ের এই মহান ব্যক্তিই আমার নবী। যার মুচকি হাসিতে ম্লান হয়ে যেত সব ক্লেশ।
এই মানুষটাই হুনাইনের যুদ্ধে পাল্টে গেলেন। আবু সুফিয়ান ইবনে হারেস রা. হযরত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খচ্চরের লাগাম ধরে আছেন। যুদ্ধ চলছে। তলোয়ারের ঝনঝনানির সাথে পার্থক্য হয়ে যাচ্ছে সত্য আর মিথ্যার। আচমকাই মুশরিকদের একদল এসে ঘিরে ধরল হযরতকে। হযরত ঘোড়া থেকে নেমে পড়লেন তেজস্বিতার সাথে। বুক টান করে বললেন,
“আনা আননাবিয়্যু লা কাযিব,
আনা ইবনু আবদিল মুত্তালিব।”
আমি নবী! এতে মিথ্যার লেশমাত্র নেই। আমি আবদুল মুত্তালিবের পৌত্র।
হাদীসের রাবী হযরত বারা ইবনে আযেব রা. বলেন, “সেদিন মানুষের মধ্যে তাঁর চেয়ে অধিক বীর-বিক্রম কাউকে দেখা যায়নি।”
এটাই আমার নবীর জীবন। মিথ্যাকে কখনই প্রশ্রয় দেননি। সব সময় নরম স্বরে কথা বলেননি। যেখানে যেমন প্রয়োজন তেমন বলেছেন।
আমাদের তো এমন পরিস্থিতি আসে। বিভিন্ন চাপে পড়ে মিথ্যাকে মাথা পেতে নেই। আবার কখনো বা নরম স্বরে কথা বলে, চেপে যাওয়ার চেষ্টা করি। কখনো অন্তরে ঘৃণা করাকেই যথেষ্ট মনে করি। কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সীরাত কি এটাই শিক্ষা দেয় আমাদের?
মাই নিউজ/মাহদী
৯৩৫ Comments